আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের বনভোজন ও পুনর্মিলনী উৎসব (ভিডিও)

নিউইয়র্ক : ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি প্রিয় মাতৃভূমির কল্যাণে একযোগে কাজের সংকল্পে অনুষ্ঠিত হলো ‘আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের (এবিপিসি) বনভোজন ও পুনর্মিলনী উৎসব। গত শনিবার নিউইয়র্ক সিটির অদূরে ওয়েস্টচেস্টারে কিংসল্যান্ড পার্কে বৈরী আবহওয়া উপেক্ষা করেই অনুষ্ঠিত হয় দিনব্যাপী এ কর্মসূচি।

এদিন আবহাওয়া এতটাই উত্তপ্ত ছিল যে, সিটি ও অঙ্গরাজ্য প্রশাসন থেকে সকলকেই ঘরে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তবে প্রেসক্লাবের সদস্য-কর্মকর্তা এবং এই ক্লাবের শুভার্থীরা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালনে সংকল্পবদ্ধ থাকায় কাউকেই ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হয়নি।

বাস এবং নিজ নিজ গাড়িতে প্রায় সকলেই বনভোজন-পার্কে পৌঁছানোর পরই শুরু হয় তরমুজ পরিবেশনা। পাশাপাশি সবুজ-অরণ্যে বাংলাদেশ ও আমেরিকা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ফুটবল খেলা শুরু হয়। রেফারি ছিলেন কমিউনিটি লিডার হাজী এনাম। ২২ জন খেলোয়ারের সকলেই নিজ নিজ অবস্থানে ভালো করেছেন। খেলা শেষ হয় গোলশূন্য ভাবে। ফলে উভয় দলকেই চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। খেলাশেষে সকলের মধ্যেই পুরস্কার প্রদান করেন বনভোজন কর্মসূচির প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ফজলুল হক। পাশে ছিলেন কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান।

দিবসের অপর প্রতিযোগিতার মধ্যে ছিলো ইয়ুথদের ৫০ মিটার দৌড়, মহিলাদের মিউজিকের তালে বালিশ নিক্ষেপ এবং বড়দের বল নিক্ষেপ। তুমুল হাস্য-রসের মধ্যে অনুষ্ঠিত এসব প্রতিযোগিতাও পরিচালনা করেন হাজী এনাম। বিনোদনমূলক হলেও অধিকাংশের জন্যই এসব ছিল খুবই প্রয়োজন। খোলামাঠে খেলাধুলার সময় খুব কমই পেয়ে থাকেন কর্মরত সাংবাদিকরা। তাই সুযোগটিকে খুবই ভালোভাবে ব্যবহারে কার্পণ্য করেননি কেউই।
ভর দুপুরে পরিবেশন করা হয় জ্যাকসন হাইটসের বিখ্যাত ‘খাবার বাড়ি’র রুচিদায়ক খাবার। শুটকি ভর্তায় মজে যান সকলে। রোস্ট, খাসির রেজালা, লাউ-চিংড়ি এবং কাবারের কথা অনেকেরই খেয়াল ছিল না। খাবার শেষে আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তন আসে। পার্কের পাশেই প্রবাহিত নদী থেকে বাতাস আসতে থাকায় অসহনীয় গরমে কিছুটা স্বস্তি পান সকলে। যদিও কর্মসূচির আনন্দ-উল্লাসে অনেকের কাছেই তেমন অস্বস্তিকর ছিল না পুরো পরিবেশ।

বিকেলের মুড়ি ভর্তার সাথে সেমাই পরিবেশনা এবং সবশেষে পান-সুপারি ছিল পুরো দিনের ভিন্ন এক আনন্দের। এ আনন্দকে আরো আকর্ষণীয় করে ১০ ডলারের র‌্যাফেল ড্র। কারণ, পুরস্কারের মধ্যে ছিল ৫০ ইঞ্চি টিভি, ৩৮ ইঞ্চি টিভি, ৩২ ইঞ্চি টিভি। আরো ছিল কয়েকটি ল্যাপটপ, আইফোন, আইপ্যাড এবং গুগল ড্রাইভের সর্বশেষ মডেল।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিগণকে পাশে নিয়ে র‌্যাফেল ড্র’র ১৪টি পুরস্কার হস্তান্তর করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের উত্তর আমেরিকা সংস্করণের নির্বাহী সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, ক্লাবের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চ্যানেল আই’র উত্তর আমেরিকাস্থ সিইও মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং সাপ্তাহিক বাঙালী ও দৈনিক ইত্তেফাকের বিশেষ সংবাদদাতা শহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক বাংলা টিভির এক্সিকিউটিভ রিজু মোহামম্মদ, কোষাধ্যক্ষ বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার আবুল কাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক এটিএন বাংলার উত্তর আমেরিকাস্থ বার্তা সম্পাদক কানু দত্ত, প্রচার সম্পাদক চ্যানেল আই-অনলাইনের প্রতিনিধি শাহ ফারুক, নির্বাহী সদস্য খবর ডটকমের সম্পাদক শিব্বির আহমেদ, বাংলাভিশনের প্রতিনিধি আজিমউদ্দিন অভি, ফারহানা চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।

সাংস্কৃতিক পর্বে গান পরিবেশন করেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী রোকসানা মির্জা।

প্রেসক্লাবের সকল কাজে নিরন্তরভাবে সহযোগিতা প্রদানকারি কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ‘কেয়ার ৩৬৫’ এর পরিচালক নিলোফার শিরিন, ওয়ার্ল্ড ট্যুরস এ্যান্ড ট্র্যাভেল ইনকের সিইও মো. শামসুদ্দিন বশির, ডেমোক্রেটিক পার্টির তৃণমূলের সংগঠক ফাহাদ সোলায়মান, শো-টাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম, তরুণ ব্যবসায়ী জয়টেক ইনকের কর্ণধার শ্যামল নাথ, বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরি সদস্য সাদী মিন্টু, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টরস কমান্ডার্স ফোরামের কোষাধ্যক্ষ আলিম খান আকাশ, প্রচার সম্পাদক শুভরায়, ইউনাইটেড কার সার্ভিসের আব্দুস সালাম আজম এবং জ্যাকসন হাইটস বিজনেস এসোসিয়েশনের লিডার হারুন ভূইয়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে গান পরিবেশন করেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী রোকসানা মির্জা।

Copyright ©2017 America Bangladesh Press Club. All Rights Reserved